চরম মজার ভালো বাসার গল্প

চরম মজার ভালো বাসার গল্প

খনখনে ঠান্ডায় মাঝরাতে ইরার গায়ে পানি ঢেলে দিলাম, বেচারি যেন ভূত দেখলো। চট করে উঠে
কী গায়ে দিবে বুঝতে পারছে না।

ঠোঁট বাচ্চাদের মতো কাঁপছে।

ঐ কী হইছে?
বলে ছোটখাটো একটা চিৎকার দিলো।
কিছু না।
কিছু না মানে?

মাঝরাতে গায়ে পানি ঢেলে দিলেন কেনো?
আমি মুচকি হেসে বললাম, এইযে তুমি শীতের
চোটে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো।

আমার তা ভালো লাগে। খুব ভালো লাগে ইরা
কাপড় পরিবর্তন করলো। বিছানা পরিবর্তন
করলো সাথে চাদরও যেহেতু ঘুম ভেঙ্গেই গিয়েছে তাহলে এখন এক কাপ কফি না হলেই না।

ইরা সেটা বুঝতে পারে। শাড়ির উপর সুয়েটার, তার উপর আরো একটা সুয়েটার, মুখ সহ কান, থুঁতি আর নাক সব একসাথে মোটা ওড়না দিয়ে ঢেকে রেখেছে।

তাঁর হাতের কফি আবার চরম হয়। চরম হাতে চরম কফি হবারই কথা।

সে চরম কফি পান করে তোশকের নিচে আরাম করে শুয়ে রইলাম।

সে আরাম আরো বেড়ে গেছে যখন ইরা কাঁপতে কাঁপতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।

এই আরাম ছেড়ে উঠতে মন চায় না। জীবনেও না। কারোরই না।

কিন্তু প্রকৃতি ডাক দিলে আরেক কথা! প্রকৃতির ডাকে সারা দেয়া অনিবার্য।

প্রকৃতির কাজ নিভিয়ে আবার তোশকের নিচে এলাম।


ইরা এবার আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো! কিন্তু,দু  যেতে না যেতেই আবার বাথরুম মশাই ডাকছে।

আবার উঠে গেলাম, কাজ সেরে পুনরায় ইরার কাছে ফিরে এলাম।

সে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, আমার আবার পেট মড়মড় করলো।

বিরক্ত হয়ে ইরা জিজ্ঞেস করলো, কই যান বারবার? ভাল্লাগে না।

একটু! আসছি।

বাথরুমে এভাবে সতেরো বার যাওয়া আসা করার পর বুঝলাম আমার ভিতরে গড়বড় হয়ে গিয়েছে আর তার পিছনে একজনেরই হাত আছে।

সে হাতটা ইরার!

তার কোমল হাতের দ্বারা নিজের কাঁধ আর বন্দী করতে পারলাম না। দুমিনিট পরপর বাথরুমে যাই আর আসি শরীরটা পুরো শূণ্য হয়ে গিয়েছে।

কমজোরি হয়ে অসহায়ের মতো বিছানায় পড়ে আছি।

ইরা ভোরে উঠে গিয়েছে, তারপর আর দেখা নেই বললেই চলে। সকাল সাতটায় এক কাপ কফি এনে বললো, শুভ সকাল স্যার!

আমি শান্ত গলায় বললাম, এটা তুমি কী করলে?
কখন কী করলাম?
এইযে রাজনীতিটা করলে, তার উপর সকাল থেকে ডাকছি, খবর নেই।

কোনো রাজনীতি তো করিনি।
অফিস যাওয়া আর হলো না তোমার কফি তুমিই পান করো। তার আগে বলো, এই রাজনীতিটা কেনো করলে? সে মুচকি হেসে বললো, এইযে আপনি অসহায় হয়ে কাছে থেকে যান, বারবার নাম ধরে ডাকেন আমাকে ছাড়া একদম চলতে পারেন না। এটা আমার ভালো লাগে খুব বেশি ভালো লাগে।

তাঁর জবাব কী দিবো বুঝতে পারছি না চুপ করে রইলাম।

গরম থাকতে কফিটা খেয়ে নিন, ঠান্ডা হয়ে যাবে।
নাহ, কাল রাত থেকে কফি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।

সে অনেকটা হেসে দিয়েই বললো, আরেহ আপনি গোস্যাও করতে পারেন দেখছি।

চুপ করে খেয়ে নিন, এটা ভালো। নাহলে আমি ব্যাগ
গোছাতে শুরু করে দিবো কিন্তু! আর কোনো চিন্তা না করে কফিটা হাতে নিয়ে নিলাম।

এই ঠান্ডায় পেট খারাপ। তার উপর যদি সে বাপের বাড়ি চলে যায়, অতো ঠান্ডা পানি হাতে লাগিয়ে আমি রান্না করতে পারবো না গো বাবা।

কফির কাপটা হাতে নিতেই আবার পেয়ে গেলো! কফি রেখে উঠতে উঠতে বললাম, হাইরে জীবন।
Previous
Next Post »