আজ নিজের ঘর নিজের কাছে অপরিচিত মনে হচ্ছে

আজ নিজের ঘর নিজের কাছে অপরিচিত মনে হচ্ছে, নিজের ঘর, অপরিচিত, মনে হচ্ছে, নিজের ঘরে নিজেই গেলাম, নিজের ঘরে, নিজের ঘর, নিজের ঘরবাড়ি, নিজের ঘরে তালা, নিজের সম্মান নিজের কাছে, নিজের কাছে প্রতিশ্রুতি, nijer bolar moto golpo, nijer somporke bola, aj nijer ghor nijer kache oporichito mone hoche, WriterMosharef

Hi I'm WriterMosharef

আজ নিজের ঘর নিজের কাছে অপরিচিত মনে হচ্ছে।

মনে হয় বহু বছর এই ঘরে কোনো জনমানুষের পদধূলি পড়েনি।

চারিদিকে অন্ধকার নিস্তব্ধ সবকিছু কেমন জানি খালি খালি লাগে।

মনে হচ্ছে জীবন থেকে কিছু একটা হারিয়ে গেছে।

কী হারিয়েছে তা তো জানিনা।

কিন্তু, এমন খালি খালি লাগে কেন?

তবুও মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে বিদুতের সুইচ টিপলাম। সাথে সাথে আলো জ্বলে উঠলো। কিন্তু আলোয় যেন পূর্ণতা পাচ্ছেনা।

সকাল পর্যন্ত অনেক আলো দিতো লাইটে, এখন মনে হচ্ছে নিভো নিভো।

অন্যদিন বাসায় আসলেই একটা প্রচণ্ড শব্দ, চিৎকার চেচাঁমেচি। একপ্রকার বিরক্ত কাজ করতো।

কিন্তু আজকে কেন, এই শব্দগুলো খুব মিস করছি।

বুকের মাঝে কেমন জানি চিনচিন ব্যথা অনুভব হচ্ছে।

ধীরে ধীরে গিয়ে সোফায় বসে পড়লাম।

টি-টেবিলে হাত দিলাম জগ থেকে পানি খাওয়ার জন্য।

কিন্তু,

একি! জগে তো পানির কোনো চিহ্নও নেই।

পানি নেওয়ার জন্য ফিল্টারে গিয়েও দেখি পানি নেই।

নাহ! আজ বড্ড বেমানানা হয়ে গেল সবকিছু।

সবকিছুর জন্য নিজেই নিজের কপালে মারছি।

কি দরকার ছিলো এত রাগ দেখানোর।

আমি না হয় রাগ দেখালাম একটু তাই বলে কি প্রিয়
মানুষ টি ও রাগ করে বাবার বাড়ি চলে যাবে।

আমার জন্য তাঁর মনে কোনো মায়া নাই।

এই কি আমাদের এতদিনের প্রেম। ধুর একটু রাগের কাছে হেরে গেলো।

না এটা তো একটু রাগ না রীতিমতো আমি তাঁর গাঁয়ে হাত তুলেছি।

আমি তাঁর স্বামী গাঁয়ে হাত তুলতেই পারি। এর জন্য সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে।

আমার মন আমাকে প্রশ্ন করতে শুরু করলো।

তুই তাঁর গাঁয়ে হাত তুলেছিস তাই সে অভিমান করেছে।
অভিমান করলে তো এতক্ষণে অভিমান ভেঙে যেত।
সে তোর উপর অভিমান করেছে, তাই তোকে তাঁর অভিমান ভাঙাতে হবে।

আমাকেই ভাঙাতে হবে কেন? আমিও তো অভিমান করছি, কই আমার অভিমান তো সে ভাঙায়নি।

শুন এই সমাজে স্বামীদের রাগ, অভিমান করার কোনো অধিকার নাই। স্ত্রীদের অধিকার আছে স্বামীর উপর রাগ করা। আর স্বামীর কর্তব্য স্ত্রীদের রাগ অভিমান ভাঙানো।

এখন আমি কি করবো।

সোজা শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা বেচারি সারাদিন থেকে কান্না করছে।

নাহ! আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকা যাবেনা। প্রিয় মানুষ কান্না করছে, আর আমি এখানে বসে থাকবো তা তো হতে পারেনা।

আর কোনো দেরী না করে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।

শ্বশুরবাড়ি কাছে হওয়াতেই তাড়াতাড়ি গিয়ে পৌঁছালাম। গিয়ে দেখি বাহিরে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।

আমি যাওয়াতে ছোট শালিটা আমার দিকে তেড়ে আসছে।

কোনোরকমে তাকে সামলে প্রিয় মানুষের রুমে গেলাম।
বেচারি বিছানায় শুয়ে আছে। আমি ধীরে ধীরে কাছে গেলাম। যাতে সে না বুঝতে পারে।

কাছে গিয়ে শুনি সে কান্না করছে, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে।

আর কোনো অজুহাত নাই, সোজা তাকে জড়িয়ে ধরলাম বললাম আমার পাগলিটা।

ছাড়ো আমায়, আমাকে আর জড়িয়ে ধরতে হবেনা।

কিন্তু নিজেকে ছাড়ানোর কোনো চেষ্টাই করছেনা।

হয়তো বুঝতে পেরেছে আমি জড়িয়ে ধরেছি।

আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরবো আবার ইচ্ছে হলো চুমুও দেবো।

আর ঢং দেখাতে হবেনা মারার সময় মনে ছিলোনা।

তখন কি আমি জানতাম তুমি এত রাগ করবে।

রাগ করে একেবারে বারার বাড়ি চলে আসবে।

তুমি আমাকে মারলে কেন?

আমি না হয় রাগে তোমাকে মেরেছি, তাই বলে তুমি বাবার বাড়ি চলে আসবে।

হুম আসবো।

আমাকে ছাড়া তুমি একা থাকতে পারবে।

নিশ্চুপ! আর কোনো কথা বের হচ্ছে না। মেয়েটা
ভীষণ অভিমানী।

আচ্ছা এখন চলো বাসায় যাবে।

না আজ আমি বাসায় যাবোনা।

বাসায় ভালো করে তালা লাগিয়ে আসিনি।

চোর ঢুকতে পারে।

কিন্তু, এই শীতের মধ্যে যাবো কীভাবে?

আমার মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে।

এই শীতে।

হুম! আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো তাহলে আর শীত লাগবেনা।

যাবো একটা শর্তে।

বলো কি শর্ত।

রাস্তার পাশে ফুচকা বিক্রি করছে। এখান থেকে ফুচকা খাওয়াতে হবে।

আচ্ছা।

আর আমাকে মারতে পারবেনা।

হুম।

আর মোটরসাইকেল থেকে আমাকে কোলে করে রুমে নিয়ে যেতে হবে।

আর! আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে হবে। যতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে তুমি আমার থেকে দূরে যেতে পারবেনা।

আর কিছু?

আপাতত আর কিছু লাগবেনা। তবে আমার একটা বেবি চাই।

তাহলে আজ থেকেই কাজ শুরু।

যা দুষ্টু! আমার বুঝি লজ্জা করেনা।

ইশ্ রে আমার বউয়ের লজ্জা করে।

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে রাগ অভিমান থাকবেই, রাগ অভিমান
ভাঙানোর দ্বায়িত্ব দুজনের।

মেয়েরা একটু বেশি অভিমানী হয় তাই ছেলেদের কেই অভিমান ভাঙাতে হবে।

ভালো থাকুক ভালবাসা, ভালো থাকুক ভালবাসার প্রিয়
মানুষগুলো।
Previous
Next Post »