Wedding Night |
বাসর রাতে দু-চারটা কথা বলেই স্ত্রীর উপর
ঝাপিয়ে পড়ল পুরুষটা। সাথে সাথে ডুবে
গেলো মেয়েটার বুনে রাখা একগুচ্ছ স্বপ্ন।
এই রাত নিয়ে মেয়েটা মনে মনে অনেক
কিছু সাজিয়ে রেখেছিলো।
কিছু সাজিয়ে রেখেছিলো।
প্রথমে দুজনে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য দুয়া করা, স্বামী লুকিয়ে রাখা ফুলটা খোপায় গেঁথে দেওয়া, মাঝরাতে দুজনে কফি বানিয়ে এক কাপে খাওয়া, ছাদে বসে প্রিয় মানুষটার কাঁধে মাথা রেখে তারা গোনা, আরো কতো কতো স্বপ্ন, সব ডুবে গেলো দেহ লোভী পুরুষ নামক একটা পশুর ঘৃণ্য থাবায়।
পুরুষটা দেহের তৃষ্ণা মিটিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
নারীটা তার স্বপ্নভাঙ্গা রাতে চোখের কোনে
জল জমিয়ে উল্টোমুখে শুয়ে থেকে রাত কাটায়।
জল জমিয়ে উল্টোমুখে শুয়ে থেকে রাত কাটায়।
কেমন করে তরকারি রান্না করো, একদিন
লবন কম, আরেকদিন ঝাল কম। তার উপর স্বাদের কিছুই নাই। এতোদিন থেকে রান্না করো তবুও রান্না সুস্বাদু হয় না। এর থেকে তো বস্তির হোটেল গুলোতেই ভালো খাবার পাওয়া যায়। যাও, ওদের কাছ থেকে রান্না শিখে আসো।
লবন কম, আরেকদিন ঝাল কম। তার উপর স্বাদের কিছুই নাই। এতোদিন থেকে রান্না করো তবুও রান্না সুস্বাদু হয় না। এর থেকে তো বস্তির হোটেল গুলোতেই ভালো খাবার পাওয়া যায়। যাও, ওদের কাছ থেকে রান্না শিখে আসো।
ভাতের থালাটা ছুড়ে ফেলে উঠে চলে যায়।
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া ভাত গুলোকে একটা একটা তুলে আর চোখের কোনে জল জমে। উনাকে মুখ খুলতে নেই, উনিতো নারী।
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া ভাত গুলোকে একটা একটা তুলে আর চোখের কোনে জল জমে। উনাকে মুখ খুলতে নেই, উনিতো নারী।
শুনো, একটা ব্যবসা ধরব, ৫ লাখ টাকা লাগবে। আমার কাছে ৩ লাখ আছে, তুমি তোমার বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ম্যানেজ করতে পারলে ব্যবসাটা ধরতাম।
মেয়েটা চুপ থাকে আর ভাবে, ভাই গুলো নিজের স্ত্রী সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বাবাও বৃদ্ধ হয়ে গেছে। পেনশনের টাকায় কোনোমতে সংসারটা চলছে। এতো টাকা বাবা কোথা থেকে দিবে। অনেকক্ষণ ধরে স্বামীকে খুব
করে বুঝালো, কিন্তু স্বামী অবুঝ, উল্টো স্ত্রীকেই বলতে শুরু করল, আমি কামাই করে তো আর একা খাচ্ছি না। তুমিও খাচ্ছো। তুমিও পড়ছ। আর আমাদের সন্তানদের জন্যও তো কিছু করা দরকার। নাকি শুধু আমি একাই করব, সন্তানটা কি শুধু আমারই?
করে বুঝালো, কিন্তু স্বামী অবুঝ, উল্টো স্ত্রীকেই বলতে শুরু করল, আমি কামাই করে তো আর একা খাচ্ছি না। তুমিও খাচ্ছো। তুমিও পড়ছ। আর আমাদের সন্তানদের জন্যও তো কিছু করা দরকার। নাকি শুধু আমি একাই করব, সন্তানটা কি শুধু আমারই?
রাতে উল্টা দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে থাকে। মেয়েটার সাথে ভালোভাবে কথা বলে না। বাসায় খাওয়া দাওয়া করে না।
শ্বাশুড়ি আর ননদেরা শুনিয়ে শুনিয়ে খোটা দিয়ে বলে, পাশের ফ্লাটের রতনের বউ বাপের বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দিয়েছে স্বামীকে, তৃতীয় তলার বউটা যৌতুক দিয়েছে চার লাখ।
তার উপর কত গয়না-গাটি। এমনিতেও কতো কিছু আনে বাপের বাড়ি থেকে। যত রকমের ফকিন্নি আর কুলক্ষিণি আমার ছেলের কপালে জুটেছে।
মুখ বুজে সব সহ্য করে সবকিছু ৷ উনাকে মুখ খুলতে নেই, উনিতো নারী। স্কুলে ছেলেকে রাখতে গিয়ে হঠাৎ রাস্তায় পুরোনো কোনো ছেলে বন্ধুর সাথে দেখা, কেমন আছিস, কোথায় থাকছিস ইত্যাদি। ভালো মন্দ দুটা
কথা হয়তো বলেছে, এই দৃশ্যটা যখন কেউ এসে তার স্বামীর বাসায় বলবে, শুরু হয়ে যাবে মানসিক নির্যাতন।
কথা হয়তো বলেছে, এই দৃশ্যটা যখন কেউ এসে তার স্বামীর বাসায় বলবে, শুরু হয়ে যাবে মানসিক নির্যাতন।
আবিস্কার হয় শাশুড়ী আর ননদের খোঁটা দেওয়ার নতুন টপিক। স্বামীর ফোনে যখন তখন অচেনা মেয়েদের নাম্বার থেকে কল আসে, নারীটা যখন বুঝতে পারে বিষয়টা, স্বামীকে বলে, কি ব্যাপার, তোমার নাম্বারে অনেক অচেনা মেয়ে কল আসে, তোমায়
খোজ করে। তুমি অনেক রাত বাড়িতে ফিরো, আমাকে সময়ও দাও না। তুমি কি অন্য কারো প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছো?
খোজ করে। তুমি অনেক রাত বাড়িতে ফিরো, আমাকে সময়ও দাও না। তুমি কি অন্য কারো প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছো?
প্লিজ, আমার সংসারটা ভাঙিয়ো না।
স্বামী কর্কশ আওয়াজ করে বলে, তোকে কি খাইতে পড়তে দেই না? তোর সমস্যা কোথায়?
স্বামী কর্কশ আওয়াজ করে বলে, তোকে কি খাইতে পড়তে দেই না? তোর সমস্যা কোথায়?
নারীটা ভেজা কণ্ঠে বলে, খাওয়া পড়ার বাইরেও অনেক চাহিদা থাকে। স্বামীর মন গলে না, রেগে গিয়ে দু-চারটা চড় থাপ্পড়ও দিয়ে চলে যায়। খাটের কোনায় মাথা রেখে বসে থাকে, চোখের কোনে জল জমে।
ভাগ্যের দোষ দেওয়া ছাড়া কিছুই করার থাকে না। উনিতো নারী। এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে আমাদের অনেকের পরিবারে।
আজকে পুরুষ দিবসে সকল পুরুষের প্রতি অনুরোধ, স্ত্রীকে ভালোবাসতে শিখুন।
মেয়েটা বাবা মা ছেড়ে আপনার ঘরে শুধু দু-মুঠো ভাতের আশায় আসেনি। সুখে দুখে আপনার পাশে আজীবন থাকার জন্য এসেছে।
নিজের স্ত্রীর ভালোলাগা, মন্দলাগা গুলোকে প্রাধান্য দিন। আমি নিজেও পুরুষ। আমার বোনটা কোনো পুরুষের ঘরে আছে, আমি চাই তার সব চাওয়া পাওয়া গুলো পূরণ হোক। তার স্বামীটা তাকে বুঝুক, তার শাশুড়ী তাকে নিজের মেয়ের মতো রাখুক।
কিছুদিন পর আমার ঘরেও কোনো নারীর আগমন ঘটবে, তার বাবা-মাও চাইবে আমার কাছে সুখে থাকুক। তখন আমার প্রধান দায়িত্ব থাকবে তাকে হ্যাপি রাখা।
উনারা নারী, সহজে মুখ ফুটে কিছু বলবে না।
নিজের ভালোলাগা মন্দলাগা কোনো কিছুই সহজে বলবে না। উঁহু, এটা তাদের দোষ নয়। সৃষ্টিকর্তা এভাবেই ওদেরকে সৃষ্টি করেছে।
আপনার অভাবের দিকে দেখে নিজের বিলাসিতা কমিয়ে দিবে, আকাঙ্ক্ষা গুলো মনের মধ্যেই চেপে রাখবে।
আপনার টাকার দরকার, স্ত্রীর উপর চাপ দিচ্ছেন। স্ত্রী সন্তানের ভরণ পোষণের যোগ্যতা নাই, তাহলে বিয়ে করেছিলেন কেন?
আপনার টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি সব আছে। কিন্তু, বৃষ্টির দিনে ছাদে আপনার সাথে কখনো ভেজা হয় না তার, জোত্স্না রাতে ছাদে আপনার কাঁধে মাথা রেখে তারা গোনা হয়না। মাসের পর মাস পার হয়ে যায়, স্ত্রীকে একটা দিন ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার সময় হয়না আপনার।
বাসায় আপনার মা/ বোন আপনার স্ত্রীর নামে কিছু বলল, আর আপনিও কিছু যাচাই না করেই স্ত্রীর উপর মানসিক/ দৈহিক নির্যাতন শুরু করে দিলেন।
এমন অসংখ্য আচরণ আছে, যেগুলো আপনার পুরুষত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
নারীদেরকে ভালোবাসতে শিখুন, বুঝতে শিখুন, শ্রদ্ধা করতে শিখুন। নারীদের উপর সকল প্রকার মানসিক/ দৈহিক নির্যাতন বন্ধ হোক।